(যারা প্রথম পর্ব পড়তে পারেন নি তারা ১ম পর্ব এখানে ক্লিক করে পড়ে নিন)
প্রথম পর্বের পর................
বৌদ্ধধর্মেরই একটা প্রবাদ: “সবার কাছেই স্বর্গের চাবিকাঠি দেওয়া আছে কিন্তু ওই চাবিতে নরকের দুয়ারও খোলে।” তাহলে আর স্বর্গের চাবিকাঠি পেয়ে কি লাভ হলো? লাভ আছে। যদিও কোনটা স্বর্গের দরজা, কোনটা নরকের, সেটা না জানলে ওই চাবিটা ব্যবহার করা বিপজ্জনক, তাই বলে চাবিটার মূল্য তো অস্বীকার করা যায়না। ওটা না থাকলে স্বর্গে ঢুকবো কিকরে? পথনির্দেশ যতই থাকুক, চাবি না থাকলে কিছুই হবে না। তাই যদিও বিজ্ঞানের হাত ধরে সমাজে চূড়ান্ত সর্বনাশ এসেছে, তবু তাকে ফেলা যায়না কারণ বিজ্ঞানের হাত ধরে অন্তত কিছু একটা করার সম্ভাবনা থাকে। বিজ্ঞানের আরেকটা অবদান হলো মস্তিষ্কচর্চার সুযোগ। কিছু লোক বিজ্ঞান পড়ে, তার থেকে শিখে কিংবা সেই নিয়ে ভাবনাচিন্তা করে অপার আনন্দলাভ করে। আবার কিছু লোকে হাতেকলমে বিজ্ঞানচর্চা করে সেই আনন্দের খোঁজ পায়। এই মস্তিষ্কচর্চার ব্যাপারটাকে কিন্তু হেসে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। অথচ বিজ্ঞানের সামাজিক প্রভাব নিয়ে যারা বিজ্ঞানীদের আরো সচেতন হতে বলে, তাদের এই দিকটা নিয়ে ভাবতে খুব একটা দেখিনা।
এই বিষয়টা নিয়ে আমি একান্তে অনেক ভেবেছি। সেইসব ভাবনার কথা বলতে গিয়ে হয়তো এমন কথার পুনরাবৃত্তি করছি যা আপনারাও নিশ্চয় ভেবেছেন। ভাবতে পেরেছেন কারণ আপনাদের সেইসব তথ্য জানা আছে যা অতীত মানুষের কাছে ছিল না।
তার উপর একটা হাতি, তার পিঠে রয়েছি আমরা1, নাকি একটা অজানা আকর্ষণের বলে কয়েক কোটি বছর ধরে ঘুরতে থাকা একটা গোলকের সাথে আমরা সেঁটে আছি, তাও আবার অর্ধেকজন হেঁটমুণ্ড হয়ে ঝুলে?
এই বিষয়টা নিয়ে আমি একান্তে অনেক ভেবেছি। সেইসব ভাবনার কথা বলতে গিয়ে হয়তো এমন কথার পুনরাবৃত্তি করছি যা আপনারাও নিশ্চয় ভেবেছেন। ভাবতে পেরেছেন কারণ আপনাদের সেইসব তথ্য জানা আছে যা অতীত মানুষের কাছে ছিল না।
এই যেমন ধরুন, আমি যখন সমুদ্রতীরে যাই, সেখানে দাঁড়িয়ে ভাবতে শুরু করি।
সামনে বহমান ঢেউ, অণুর পাহাড়, যে যার নিজের কাজেই মত্ত, পরস্পরের থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন, অথচ সবাই মিলে একসাথে একটাই সাদা ফেনা তৈরি করছে।
বছরের পর বছর ধরে, যখন কোন দৃষ্টি তাকে স্পর্শ করেনি, সময়ের আপন বহমানতায় সে তীরে এসে আজকের মতই আছড়ে পড়েছে। কার জন্য, কিসের জন্য? একটা মৃত গ্রহে যেখানে প্রাণের সম্ভাবনা অনিশ্চিত।
বিরামহীন, শক্তি তাড়িত, সূর্যের আদরে লালিত, শূন্যের মাঝে এই সৃষ্টি। বিন্দু বিন্দু জুড়ে সমুদ্রের এই মহাগর্জন।
সমুদ্রগর্ভে একই অণু থরে থরে সাজানো, এর মধ্যে থেকেই নতুন জটিলতর অণুর সৃষ্টি হয়। ক্রমে এরা নিজেদের আদলে আরো অণু তৈরী করে, শুরু হয় একটি নতুন নৃত্য।
- নাজমুল হাসান