রাত আড়াইটার কিছু পরে ব্যালকনিতে গিয়ে দাঁড়ালাম। চারপাশের পরিবেশ যেন কুয়াশার চাদরে মোড়া, এক অদ্ভুত নিস্তব্ধতায় ছেয়ে গেছে। কেবল ঝিঁঝিঁ পোকার একটানা ডাক ভেসে আসছে, যেন রাতের নিশ্চুপতাকে আরও গভীর করে তুলছে।
মিনিট দুয়েক পর, নিচে রাস্তায় একটা গাড়ির শব্দ ভেসে এল। টায়ারের কর্কশ আওয়াজের সঙ্গে গাড়িটা থামল।
দরজা খুলে নামলেন এক নারী—বেগম সাহেবা। তিনি নামতেই ধীরে ধীরে ডানে-বামে ঘাড় ঘুরিয়ে কী যেন খুঁজলেন, যেন চারপাশের অন্ধকারকে চোখ দিয়ে ছুঁয়ে দেখছেন। তারপর পকেট থেকে একটা সিগারেট বের করে ঠোঁটে গুঁজে দিলেন। লাইটারের ক্ষীণ শিখায় সিগারেটের আগুন জ্বলে উঠল। তিনি গভীর টান দিয়ে ধোঁয়া ছাড়লেন, আর সেই ধোঁয়া কুয়াশার সঙ্গে মিশে যেন রহস্যময় আকার নিল।
হঠাৎ, পাশের ঝোপঝাড় থেকে তিনি কী যেন একটা টেনে বের করলেন—বড়, ভারী, মাংসের মতো একটা দলা।
ল্যাম্পপোস্টের ম্লান আলোয় তা স্পষ্ট দেখা গেল। তিনি সেটা হাতে নিয়ে কী যেন করলেন এরপর তা গলাধঃকরণ করলেন!
আমার সারা শরীরে শিহরণ খেলে গেল, গা যেন কেঁপে উঠল। হঠাৎ তিনি উপরের দিকে তাকালেন—ঠিক আমার দিকে। ল্যাম্পপোস্টের আলোয় তাঁর চোখ দুটো রক্তিম ঝকঝক করছে। সেই দৃষ্টিতে যেন আমার ভেতরটা হিম হয়ে গেল।
ভয়ে আমার হৃৎপিণ্ড যেন গলায় উঠে এল। আমি এক দৌড়ে তিনতলার ব্যালকনি থেকে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলাম।
এখনও নিজেকে বোঝাতে পারছি না—যিনি আমার দিকে তাকালেন, তিনি মানুষ ছিলেন, নাকি অন্য কিছু?
— রাত ০২:৫৬, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫
(গুয়াংজু)