Featured

PhysicsSpaceSubject

২২° HALO সূর্যবলয়

, মার্চ ২২, ২০২০ WAT
Last Updated 2021-03-25T05:32:16Z

চিত্রটি দেখে কি ভাবছেন ? ব্লাকহোলের গ্রাফিক্স ইলাস্ট্রেসন, ভিন গ্রহের সূর্য নাকি অতিমানবিয় কোন ঘটনা? অনেকসময় হয়ত লক্ষ করেছেন যে লেন্স দিয়ে কোন মোমবাতি বা হারিকেনের দিকে তাকাল একটি অদ্ভুদ বলয় দেখা যায় । এটিও অনেকটা তেমনি ধরে নিন । বলয়টিকে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলেন হ্যালো(halo)। এটা চাঁদ ও সূর্য দুটোর ক্ষেত্রেই ঘটে। বাংলায় একে কিরীট বা জ্যোতির্বলয় বলা হয়। এই বলয় তৈরির মূল কারণ উঁচু আকাশের পালকের মতো হালকা নরম মেঘ। এর নাম অলক মেঘ (cirrus cloud)। অনেক সময় আকাশে মেঘের অস্তিত্ব দেখা না গেলেও হ্যালো চোখে পড়ে। এর কারণ, এই মেঘ খুব সহজে চোখে পড়ে না । এই মেঘগুলো ভূপৃষ্ঠ থেকে বিশ হাজার ফুট বা তারও ওপরে চলাচল করে। একটি হিসাব মতে এদের উচ্চতা ভূমি থেকে ৬ থেকে ৯ কিলোমিটার উপর পর্যন্ত। অথচ ভূমি থেকে মাত্র ১২০০ মিটারের মধ্যেও অনেক সময় বিভিন্ন মেঘ থাকে।কিন্তু এই মেঘের সাথে হ্যালোর সম্পর্ক কী? এই অলক মেঘদের মধ্যে থাকে বরফের লক্ষ লক্ষ স্ফটিক। বরফের এই স্ফটিকেরা চাঁদের আলোকে (আলোর মূল উৎস অবশ্যই সূর্য) একই সাথে প্রতিসরিত ও প্রতিফলিত করে। ফলে হ্যালোও অনেকটা রংধনুর গোল হয়। অবশ্য রংধনুর সম্পূর্ণ বলয় আমরা সাধারণত দেখি না, কারণ অধকাংশ ক্ষেত্রেই নিচের অংশ থাকে পৃথিবীর আড়ালে (উল্টো পাশে)। রংধনুর মতোই চাঁদ বা সূর্যের হ্যালোও একেক জায়গা থেকে একেক রকম দেখায়।বরফের স্ফটিকদের আকার নির্দিষ্ট বলে হ্যালোও সব সময় প্রায় একই সাইজের হয়।

এই বলয়ের ব্যাস প্রায় সব সময় ২২ ডিগ্রি হয়। ভাগ্য ভালো হলে অনেক সময় মূল বলয়ের বাইরে ৪৪ ডিগ্রি ব্যাসের আরেকটি বলয় দেখা যায়। আপনি ভাল্ভাবে লক্ষ্য করলে ৪৪ ডিগ্রি ব্যাসের এই দ্বিতীয় বলয়টিকে ভাল্ভাবে দেখতে পাবেন । আকাশের ডিগ্রির হিসাব সাধারণ কোণের হিসাবের মত নয়। পুরো আকাশ যেহেতু মোট ৩৬০ ডিগ্রি, তাই যে কোনো সময় আমাদের মাথার উপর শুধু ১৮০ ডিগ্রি থাকে, বাকিটা থাকে পৃথিবীর উল্টো পাশে। আর এখানে ডিগ্রির হিসাব হল এই ১৮০ ডিগ্রির মধ্যে কোন বস্তু কতটুকু জায়গা দখল করেছে তা। এটা পূর্ব-পশ্চিমেও হিসাব করা যায়, আবার উত্তর- দক্ষিণ বা অন্য কোনো দিকের ভিত্তিতেও হিসাব করা যায়। আমাদের হাতকে লম্বা করে সামনে বাড়িয়ে দিয়ে মুষ্ঠিবদ্ধ করে আকাশের দিকে ধরলে এক মুষ্ঠির পরিমাণ হয় ১০ ডিগ্রি। আরেকটি ব্যাপার আছে । তা হল মুল হ্যালো থেকে অনেকসময় হাতের বাম ও ডান দিকে দুইটি জেট বা স্ফুলিঙ্গের মত আলোক রশ্মি দুইদিকে চলে গেছে । এই ঘটনাকে সানডগ বা মায়া-সূর্য(parhelia) বলে । আমরা বিষুব রেখার নিকটবর্তী অঞ্চলে বাস করি বিধায় হ্যালো দেখতে পেলেও মায়া-সুর্য দেখতে পারি না । এর কারন হল পৃথিবীর অক্ষীয় নতি ।
তথ্যঃ https://apod.nasa.gov/apod/ap180101.html
https://en.wikipedia.org/wiki/22%C2%B0_halo